ডা. শাহনেওয়াজ চৌধুরী কি ষড়যন্ত্রের শিকার?

292
ডা. শাহনেওয়াজ চৌধুরী কি ষড়যন্ত্রের শিকার?

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

প্রয়াত সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের উদ্যোগে ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, এরপর দীর্ঘ ১৫ বছর সহ-সভাপতি ও দীর্ঘ ১২ বছর সভাপতির দায়িত্ব পালনকারী ডা. শাহনেওয়াজ চৌধুরী কি সমিতির নব্য সদস্যদের ষড়যন্ত্রের শিকার? এ প্রশ্ন এখন সমগ্র নারায়ণগঞ্জবাসীর।

নারায়ণগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতি ও ডায়াবেটিক হাসপাতালের আজীবন সদস্য ডা. শাহনেওয়াজ চৌধুরীকে এ সমিতি থেকে বের করে দিতে উঠে পড়ে লেগেছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল এমনটাই জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সমিতির বেশ কয়েকজন সদস্য।
এর কারণ হিসাবে তারা বলছেন, ডা. শাহনেওয়াজ চৌধুরী সহ-সভাপতি ও সভাপতি পদে থাকাকালীণ সময়ে কেউ কোনো লুটপাট-দুর্নীতি করতে পারে নি বা নিজের আখের গোছাতে পারে নি তাই স্বার্থান্বেষী ঐ মহলটি এবার তার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে।

তারা আরও বলেন, তিনি যখন এ সমিতির দায়িত্বে ছিলেন তখন কাউকে কোনো নিয়ম বহির্ভূত কর্মকান্ড করতে দেন নি। যখনই কেউ লুটপাট-দুর্নীতি করতে চেয়েছেন, তখনই বাধা হয়ে দাড়িয়েছেন ডা. শাহনেওয়াজ। আর এটাই হচ্ছে তাকে অপসারণ করতে চাওয়া চক্রান্তের মূল কারণ।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আমাদের হাতে এসেছে বেশ কয়েকটি ডকুমেন্ট। যেখানে দেখা যাচ্ছে, ১৯৮৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর সাবেক সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের নেতৃত্বে ১২জন গুণীজনকে সাথে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতির প্রথম প্রস্তুতি সভা সম্পন্ন হয়। যেখানে ৫ নম্বরে রয়েছে ডা. শাহনেওয়াজ চৌধুরীর নাম। এখানে আরও ছিলেন প্রয়াত সাংবাদিক মজিবুর রহমান বাদল, সমাজ সেবক জহিরুল হক মিস্টার, ডা. মহিবুল ইসলাম প্রমুখ। ঐ সভায় ৭ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক আহবায়ক কমিটি গঠন করে পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

পরে ১৯৮৭ সালের ২৫ জানুয়ারী ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। যেখানে ৫নং সদস্য হিসাবে রয়েছেন ডা. শাহনেওয়াজ চৌধুরী। সেদিন তারা প্রত্যেকেই ১০০০ টাকা করে চাঁদাও প্রদান করেন।

পরবর্তীতে ১৯৯৫-৯৭, ৯৮-২০০০, ২০০১-০৩, ২০০৪-০৬ ও ২০০৭-০৯ সাল পর্যন্ত পাঁচ মেয়াদে মোট ১৫ বছর মহাসচিবের দায়িত্ব পালনকারী সাবেক সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের নেতৃত্বে সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ডা. শাহনেওয়াজ।

সাবেক সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের প্রয়ানের পর ২০১০-১২, ২০১৩-১৫, ২০১৬-১৮, ২০১৯-২১ সাল পর্যন্ত ৪ মেয়াদে মোট ১২ বছর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ডা. শাহনেওয়াজ। এখানে উল্লেখ্য যে, ২০১৩-১৫ সালের নির্বাচনের সময়ে নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছিলেন এ, ওয়াই, এম হাশমত উল্লাহ।

অধিক দামে মিশনপাড়ায় ফ্ল্যাট কিনেছেন ডা. শাহনেওয়াজ এ অভিযোগের বিষয়ে প্রাপ্ত ডকুমেন্ট থেকে বলা যায়, ডায়াবেটিক সমিতির পক্ষ থেকে ক্রয়কৃত এ ফ্ল্যাটের দলিলে প্রথম স্বাক্ষর করেন এ, ওয়াই, এম হাশমত উল্লাহ।

সমিতির সদস্যদের প্রশ্ন, ডা. শাহনেওয়াজের সদস্য পদ যদি অবৈধ হয়ে থাকে তাহলে নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান থাকাকালীণ সময়ে এ, ওয়াই, এম হাশমত উল্লাহ সাহেব কেন তা যাচাই-বাছাই করেন নি। এছাড়া, ফ্ল্যাট ক্রয়ের সময় যদি অধিক দাম দিয়ে তা কেনা হয়ে থাকে তাহলে এ, ওয়াই, এম হাশমত উল্লাহ সাহেব তখন কেন স্বাক্ষর করলেন এবং কেন তিনি তখন বাধা দেন নি?

এ সকল বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে এ, ওয়াই, এম হাশমত উল্লাহ বলেন, এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন আমাদের সেক্রেটারী সাহেব। আপনি নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করা সময়ে ডা. শাহনেওয়াজ কিভাবে সভাপতি হলো এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তখন তার কোনো অপনেন্ট ছিলো না তাই এগুলো দেখা হয় নাই।

ডা. শাহনেওয়াজের দাবি তিনি প্রথম থেকেই ডায়াবেটিক সমিতিতে ছিলেন এবং ১০০০ টাকা দিয়ে সদস্য হয়েছেন কিন্তু এর কোনো প্রমাণ নেই বলে জানান এ, ওয়াই, এম হাশমত উল্লাহ। তিনি আরও বলেন, সদস্য না হয়েই দীর্ঘ সময় তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করে প্রায় ৩/৪ কোটি টাকা লুটপাট করেছে।

তিনি আরও বলেন, আমাকে কেন সদস্য পদ থেকে বহিস্কার করা হয়েছিলো?