পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে না.গঞ্জে বিএনপির তৃনমূলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া...

জনগনের ভোটাধিকার হরণে সহায়তা করতে চায় না ভারত!

144
জনগনের ভোটাধিকার হরণে সহায়তা করতে চায় না ভারত!

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য ভারতকে অনুরোধ করার কথা পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবদুল মোমেন মিডিয়ায় প্রকাশ করার পর সারা দেশে এ নিয়ে তোলপাড় চলছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সহ সব রাজনৈতিক দলই এখন তার এই বক্তব্য নিয়ে নানা রকম প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করছেন। আওয়ামী লীগ এতে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন। এরই মাঝে আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন এটা পররাষ্ট্র মন্ত্রীর ব্যাক্তিগত বক্তব্য। এটা দলের বক্তব্য নয়।

কিন্তু বিএনপি নেতারা মনে করেন, এটাই বাস্তবতা। আওয়ামী লীগ এসব করেই রাষ্ট্র ক্ষমতায় টিকে আছে। বর্তমান সরকার জনগনের সরকার নয়, বিদেশীদের ছায়ায় অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে আছে।

এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রী যদিও নির্লজ্জভাবে এ কথা বলেছেন তারপরেও তিনি সত্য বলেছেন। তিনি প্রকাশ করে দিয়েছেন যে, আওয়ামী লীগ এ দেশের মানুষের ভোটের অধিকারে বিশ^াস করে না। আওয়ামী লীগ এখন থেকে ১৫ বছর আগে ক্ষমতায় এসেছে ১/১১ এর সরকারের সহায়তায়। এরপর আর এ দেশের মানুষ তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পায়নি। মূলত তখন থেকেই নিরপেক্ষ মাধ্যমগুলিতে বিদেশী শক্তির সহায়তায় এই সরকার দেশের জনগনের ভোটের অধিকার হরন করেছে বলে প্রচার রয়েছে।

তিনি বলেন, বিগত প্রায় পনেরো বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিতে পারছে না। কোনো নির্বাচনেই তারা ভোটে দিতে পারছে না। জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে শুরু করে স্থানীয় পর্যায়ের প্রত্যেকটি নির্বাচনে ওপেন কারচুপি হচ্ছে। আর বিগত সংসদ নির্বাচনতো সরকার দিনের ভোট রাতে করেছে। উপজেলা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও মানুষ ভোট দিতে পারছে না। তাই আমরা মনে করি একটি দেশ এভাবে বেশি দিন চলতে পারে না। এই সরকারের সময় শেষ হয়ে এসেছে। তবে যাবার আগে সরকার দেশের অপূরনীয় ক্ষতি করে রেখে গেলো।

তিনি আরো বলেন, পররাস্ট্র মন্ত্রী মোমেন ভারতে অনুরোধ করার কথা বলে প্রকাশ করে দিয়েছেন যে, সরকার কতোটা দেউলিয়া হয়ে পরেছে। তিনি আরো বলেন, তার এই মন্তব্যের মাধ্যমেই বলে দিয়েছেন দেশে সরকারের গ্রহনযোগ্যতা একেবারেই শুন্যের কোঠায়।

এদিকে এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনিও একই রকম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন যে কথা বলেছেন তাতে তিনি কোনো মিথ্যে কথা বলেননি। তিনি সত্যিই বলেছেন। এই সরকার বাংলাদেশের জনগনের সরকার নয়। এই সরকার বিদেশীদের পা চাঁটা সরকার। আর বিদেশীদের পদলেহন করেই টিকে আছে এই সরকার। জনগনের ভোটের অধিকার হরন করে টিকে আছে এই সরকার।

তিনি আরও বলেন, মোমেন সাহেব সেই কথাই এখন প্রকাশ্যে বলছেন। কারণ তিনি জানেন বাংলাদেশের জনগন কোনোদিন আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে না। অতীতেও দেয় নাই। এখনো দেবে না। তাই জনগনের ভোটে তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। আর এ কারনেই তারা এখন ভারতের কাছে ধর্না দিচ্ছে। তবে আমরা মনে করি এবার আর বাঁকা পথে তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। জনগন আর তাদেরকে সেই সুযোগ দেবে না। এই সরকারের পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

অপরদিকে একই বিষয়ে ফতুল্লা থানা বিএনপি নেতা হাজী মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রী মোমেন সাহেব যথার্থই বলেছেন। এই সরকার ভারতের মদদপুষ্ট সরকার। বাংলাদেশের জনগনের সরকার নয়। আর এ কারনেই এই সরকার এই দেশকে এরই মাঝে দেউলিয়া করে ছেড়েছে। জিনিসপত্রের দাম সরকার এতোটাই বাড়িয়েছে যে ঘরে ঘরে মানুষ না খেয়ে আছে। দেশের সত্তর ভাগের বেশি মানুষ তিন বেলা ঠিক মতো খেতে পারছে না। এই সরকার একটি অগণতান্ত্রিক এবং স্বৈরাচারী সরকার বলেই নানা ভাবে দেশের মানুষকে নির্যাতন নিষ্পেশন করে চলেছে।

তিনি বলেন, জ্বালানীর মূল্য আকাশ ছুঁয়েছে। চাল, ডাল, তেল, নুন সহ সব কিছুর দাম এতোটাই বেড়েছে যে, মানুষ এখন বাধ্য হয়ে একেবারে কম খাচ্ছে। দেশ এখন দেউলিয়া হওয়ার পথে রয়েছে। আর দেশের এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই বলেই। এই সরকার ভারতের মদদে জোর করে ক্ষমতায় থেকে দেশকে একেবারে দেউলিয়া করে ছেড়েছে। তাই আমি মনে করি পররাষ্ট্র মন্ত্রীর মুখ দিয়ে এবার সত্য কথাই বের হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, তবে আমার মনে হয় আওয়ামী লীগের এই অবৈধ কাজে এখন আর ভারত সহায়তা করতে চাইছে না। আর এ কারনেই পররাষ্ট্র মন্ত্রী এখন প্রকাশ্যেই আকুতি মিনতি শুরু করেছে। সরকার এখনো চাইছে ভারতে সহায়তা নিয়ে জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে। কিন্তু এবার আর তারা সফল হবে না বলেই আমার মনে হচ্ছে।