শ্যাম রাখি না কুল রাখি অবস্থা কেন্দ্রের...

জটিল সংকটে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি

139
জটিল সংকটে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

এবার বেশ জটিল সংকটের মুখে পতিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি। এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান এবং আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটি ঘোষনার পর থেকে মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ভাবেই চলছিলো এই কমিটির কার্যক্রম। যদিও কমিটি ঘোষনার সঙ্গে সঙ্গেই সাবেক এমপি এডভোকেট আবুল কালামের অনুসারীরা বিদ্রোহ করেন এবং এই কমিটি না মেনে তারা পৃথক ভাবে কর্মসূচি পালন করা শুরু করেন।
কিন্তু তারপরেও সাখাওয়াত এবং টিপু গোটা মহানগরের আওতাধীন বিভিন্ন ইউনিট কমিটি গঠন করে ফেলেন। তবে কালাম অনুসারীদের মধ্যে বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, নাসিক কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আবদুস সবুর সেন্টু সহ আরো অনেকে অভিযোগ করেন যে তৃনমূল পর্যায়েও তাদের লোকদের বাদ দিয়ে বা অনেক ক্ষেত্রে কম গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়ে করা হয়েছে সকল কমিটি।

তবে সাখাওয়াত হোসেন খানের দাবি, তিনি বার বার চেষ্টা করেছেন সবাইকে নিয়ে কমিটি করার জন্য। কিন্তু কেউ কেউ তার ডাকে সাড়া দেননি। তারপরেও দলকে একটি শক্তিশালী সাংগঠনিক ভিত্তির উপর দাড় করাতে সক্ষম হয়েছেন বলে তিনি মনে করেন। সকল ইউনিট কমিটি সম্পন্ন করার পর এখন কেবল মাত্র মহানগর কমিটি বাদ রয়েছে। সর্বশেষ আগামী ১৫ জুলাই মহানগর বিএনপির সম্মেলন আহবান করা হয়েছিলো। যেখানে প্রধান অতিথি হয়ে আসার কথা ছিলো বিএনপির স্থাঢী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আর সাখাওয়াত সভাপতি এবং টিপুর সাধারন সম্পাদক হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত ছিলো অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১৫ জূলাইয়ের সম্মেলন বাতিল করা হয়েছে।

জানা গেছে, কালাম গ্রুপের তদ্বিরের কারনেই বাতিল করা হয়েছে এবারের এই সম্মেলন। তবে এই সময়ে এসে কালাম গ্রুপ কিছুটা ছাড় দিয়ে হলেও সমঝোতা চাইছে বলে জানিয়েছেন এই গ্রুপের নেতারা। তারা এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে সভাপতি হিসাবে মেনে নিতে রাজী। কিন্তু সাধারন সম্পাদক হিসাবে তারা আবুল কাউসার আশাকে চান। তারা বিএনপির কেন্দ্রকে বুঝিয়েছেন যে দলের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের একটি অংশ বাদ পরে যাচ্ছেন।

তারা দাবি জানিয়েছেন, এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের সাথে আবুল কাউসার আশাকে সাধারন সম্পাদক করার জন্য। তারা কেন্দ্রে অভিযোগ করেছেন যে আবু আল ইউসুফ খান টিপু নাকি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনএফ এর আহবায়ক ছিলেন। যদিও বিএনএফ নাম সংগঠনটির এখন আর তেমন কোনো অস্তিত্ব নেই। কিন্তু তারপরেও এটা যেনো টিপুর সাদা পাঞ্জাবিতে এক ফোটা রক্তের ছিটা।

এদিকে কালামপন্থীরা মহানগরের সভাপতি হিসাবে এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে মেনে নিলেও সাখাওয়াত নিজেই চান টিপুকে নিয়ে কমিটি করতে। কারন টিপুর সাথে যে সখ্যতা বিরাজ করছে এটা নেই কালামপন্থীদের সাথে। যার ফলে সাখাওয়াতকে সভাপতি আর আশাকে সাধারন সম্পাদক করা হলে আবারও দলে বিভক্তির সৃষ্টি হবে বলে রাজনৈতিক সচেতন মহল মনে করেন। কারন এরই মাঝে গত কয়েক বছরে কালামপন্থীদের সাথে সাখাওয়াতপন্থীদের বেশ দূরত্বের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও এই দূরত্বের জন্য কালামপন্থীরা টিপুকেই দায়ী করেন। কিন্তু তখন কালামপন্থীরা টিপুর উপর নির্ভরশীল ছিলেন এবং সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে তাকে তারা ব্যবহার করেছেন। তারপরেও সাখাওয়াত মনে করেন, এই মুহুর্তে আন্দোলন সংগ্রাম এবং আগামী নির্বাচনের জন্য আবু আল ই্সুফ খান টিপুই তার জন্য নিরাপদ। তাই তিনি চাইছেন যেকোনো মূল্যে টিপুকে সাধারন সম্পাদক করতে। কিন্তু বিপরীতে বিএনপির কেন্দ্রে সাবেক এমপি এডভোকেট আবুল কালামের পরিবারের গুরুত্বও একেবারে কম নয়। তাই এই মুহুর্তে এসে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি নিয়ে শ্যাম রাখি না কুল রাখি অবস্থায় পতিত হয়েছে বিএনপির কেন্দ্র।