জেলা বিএনপিতে প্রবল নেতৃত্ব সংকট...

চলমান আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার মতো নেতা নেই জেলা বিএনপিতে!

150
চলমান আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার মতো নেতা নেই জেলা বিএনপিতে!

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

নারায়ণগঞ্জ জেলায় বিএনপির রাজনীতিতে নেতৃত্ব সংকট বেশ প্রবল আকার ধারন করেছে। পরিস্থিতি এখন যেখানে গিয়ে ঠেকেছে যে জেলার তৃতীয় সারির নেতারা এখন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ভারপ্রাপ্ত আহবায় মনিরুল ইসলাম রবি আর সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ সারা জেলায় বিএনপিকে নেতৃত্ব দেয়ার মতো কোনো যোগ্যতাই রাখেন না বলে মনে করেন এই দলের অনেক নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।

এর আগে মামুন মাহমুদ টানা পাঁচ বছরের বেশি জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু এই পাঁচ বছরে তিনি জেলা ব্যাপী দলকে শক্তিশালী করার পরিবর্তে আরো দূর্বল করেছেন। আর মনিরুল ইসলাম রবিরতো একজন কর্মীও নেই। তিনি ওয়ানম্যান-শো রাজনীতিবিদ।

রবি এক সময় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তবে শাহ আলম বিএনপির রাজনীতিতে আসার পর তিনি শাহ আলমের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন এবং জেলা বিএনপির রাজনীতিতে পদ বাগিয়ে নেন। সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন যখন এমপি ছিলেন তখন এই রবি গিয়াস উদ্দিনের সাথে থেকে রাজনীতি করেছেন। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ জেলায় বিএনপিকে নেতৃত্ব দেয়ার মতো যোগ্যতা যে তার নেই এটা মানেন সকলেই।

এদিকে যেমনই হোক এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের এক ধরনের ধারভার দুটোই ছিলো। কিন্ত তিনি নৈতিক ভাবে তেমন শক্তিশালী ছিলেন না। তাই বিগত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তার নিজের দলের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে অংশগ্রহন করেন তিনি। এতে বিএনপি যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে তাতে বেশ বড় ধরনের ক্ষতি হয়। আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপির আন্দোলনের বিরুদ্ধে কথা বলার সুযোগ পায়।

বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচন আওয়ামী লীগ জনগনের ভোটের অধিকার হরন করে দিনের ভোট রাতে করলেও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন তারা সুষ্ঠু করে। এতে জনপ্রিয় আইভীর কাছে বিপুল ভোটে হেরে যান তৈমুর। আর নির্বাচনের আগেই তৈমুরকে দল থেকে বাদ দেয়া হয়। যার ফলে তিনি মাইনাস হওয়ার পর একেবারেই নেতৃত্ব শুন্য হয়ে পরে জেলা বিএনপি।
আর এই মুহুর্তে জেলা বিএনপির অবস্থা আরো নাজুক বলেই জানা গেছে। তবে অনেকে মনে করেন, এই মুহুর্তে এমন একজন রয়েছেন যাকে দায়িত্ব দিলে জেলা বিএনপি খুব অল্প সময়েই চাঙ্গা হয়ে উঠতে পারে। আর তিনি হলেন সাবেক এমপি আলহাজ¦ মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন।

কিন্তু তাকে ঠেকাতে দলের ভেতর বাহিরে তৎপর রয়েছে একটি বড় চক্র। দলের ভেতর থেকে যেমন কাজী মনির, মামুন মাহমুদ আর মনিরুল ইসলাম রবি প্রমুখ তাকে নেতৃত্বে দেখতে চান না। তেমনি দলের বাহিরে থেকে দল ত্যাগী ধন্যাঢ্য নেতা শাহআলম সহ আরো অনেকে চাননা সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন জেলা বিএনপির নেতৃত্বে আসুক। যার ফলে গিয়াস উদ্দিনও এক পা এগুলে মানসন্মান হারানোর ভয়ে দুই পা পিছান।

এছাড়া দলের আরো দুই প্রভাবশালী নেতা হলেন রূপগঞ্জের মোস্তাফজুর রহমান ভুইয়া দীপু এবং আড়াইহাজারের নজরুল ইসলাম আজাদ। তারাও গিয়াস উদ্দিনকে জেলা বিএনপির নেতৃত্বে বসাতে জোরালো কোনো ভূমিকা নিচ্ছেন না। তারা নিজেরা চান কেবল এমপি হতে। অবশ্য এই দুইজনের মাঝে নজরুল ইসলাম আজাদ কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। জেলা বিএনপির নেৃতত্বে আসার এমনিতেও তার কোনো প্রয়োজন নেই।

ফলে এসব কিছু মিলিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতৃত্বে এখন হ-য-ব-র-ল অবস্থা বিরাজ করছে। তাই নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন, সামনে যে সংসদ নির্বাচন রয়েছে তাকে সামনে রেখে চলমান যে আন্দোলন সংগ্রাম চলছে তাতে নেতৃত্ব দেয়ার মতো যোগ্যতা সম্পন্ন নেতার ভীষণ অভাব দেখা দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপিতে।