মামুন মাহমুদের ঘটনায় না.গঞ্জ প্রেসক্লাবে বিএনপি নেতৃবৃন্দের সংবাদ সম্মেলন, গ্রেফতার জুয়েল গিয়াস পরিবারের কারো নাম বলে নি......

গিয়াসকে ঠেকাতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকতে পারেন শামীম ওসমান!

220
গিয়াসকে ঠেকাতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকতে পারেন শামীম

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও তার পরিবারকে ঘিরে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শনিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের ৬ষ্ঠ তলায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে তারা অভিযোগ করেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনপ্রিয় সাবেক এমপি আলহাজ¦ মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিনের মনোনয়ন ঠেকাতে সরকার দলীয় বর্তমান সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান এই ষড়যন্ত্রে শামিল থাকতে পারেন। কারন শামীম ওসমান আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলে তিনি চাইবেন গিয়াস উদ্দিন যাতে বিএনপির মনোনয়ন না পান এবং তার চেয়ে দূর্বল কেউ বিএনপির মনোনয়ন পান। তাই শামীম ওসমান জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মামুন মাহমুদের উপর হামলার ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিয়ে গিয়াস পরিবারের উপর দোষ চাপাতে পারেন।

লিখিত বক্তব্যের একটি স্থানে উল্লেখ করা হয়েছে, “আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের শামীম ওসমান সাহেব নমিনেশন পাবেন সেটি চূড়ান্ত ধরে নিতেই পারি। এই নির্বাচনে বিএনপি থেকে গিয়াস উদ্দিন সাহেবও নমিনেশন চাইবেন, তার পাশাপাশি অন্যরাও চাইবেন। আবার শামীম ওসমান সাহেবও চাইবেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তার অপেক্ষায় দূর্বল হোক। এমন নানা যোগ বিয়োগেই আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে কি গিয়াস উদ্দিন সাহেব সহ তার পরিবারকে ঘিরে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে কিনা সেই ভাবনার ভার আপনাদের উপর ছেড়ে দিলাম।

এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএনপি নেতা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট বারী ভুইয়া। আরও উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার মনিরুল ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক এম এ হালিম জুয়েল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম, কাশীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আলাউদ্দিন খন্দকার শিপন, জেলা যুবদলের সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ এবং কাশীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক মঈনুল হোসেন রতন সহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।

সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, মামুন মাহমুদের উপর যারাই হামলা করে থাকুক না কেনো তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ আমরাও জানাই এবং এই হামলার সুষ্ঠু তদন্ত চাই। কিন্তু হামলার পর রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য কুচক্রী মহল উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাঁড়ে চাপাতে উঠেপরে লেগেছে। যার ফলে এবার ঈদের চারদিন আগে তার বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে তার পরিবারকে হয়রানী করা হয়।

তারা বলেন, আমরা মনে করি চক্রান্তকারীরা যেমন আমাদের নিজ দলে রয়েছেন তেমনি তাদের সহযোগীরা অন্য দলেও রয়েছে। তাদের অভিন্ন লক্ষ্য নিজেদের রাজনৈতিক পথ পরিস্কার করার জন্য গিয়াস উদ্দিন সাহেবকে কাবু করা এবং রাজনীতি থেকে মাইনাস করা। সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই

নির্বাচনকে সামনে রেখে ষড়যন্ত্রকারীরা আবারও ব্যাপক ভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বিগত একাদশ সংসদ নির্বাচনেও এই গোষ্ঠীটি একই ভাবে ষড়যন্ত্র শুরু করেছিলো। গোষ্ঠীটি প্রচার চালিয়েছিলো মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন সাহেব নাকি ঢাকায় সরকার দলীয় কোন কোন নেতার সাথে বৈঠক করেছেন, নির্বাচন শেষে তিনি তার ছেলে কাউন্সিলর সাদরিলকে আনুষ্ঠানিক ভাবে আওয়ামী লীগে যোগদান করাবেন। সরকার দলীয় একজন এমপির হয়ে তখন এমন প্রচার চালানো হয়েছিলো। গুটি কয়েক মুখোশধারী অর্থলোভী এই প্রচারনায় অংশগ্রহন করেছিলো। পরবর্তীতে সাদরিল আওয়ামী লীগের যোগ দিয়েছিলো কিনা, সেসব প্রচার আধৌ সত্য ছিলো কিনা, আপনারাই অবগত রয়েছেন। তাই আমরা মনে করি একাদশ সংসদ নির্বাচনের মতো করে বর্তমানেও একই কায়দায় আমাদের প্রিয় নেতা আলহাজ¦ মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও তার পরিবারকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করা হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ২৫ এপ্রিল রাতে ঢাকার পল্টনে ছুড়িকাহত হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মামুন মাহমুদ। যা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক একটি ঘটনা। এমন একটি ঘটনাকে কখনোই কোনো সুস্থ্য মস্তিষ্কের মানুষ সমর্থন করতে পারে না। অথচ এই ঘটনাকে ঘিরে গিয়াস উদ্দিন সহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে তা কেবল দু:খজনকই নয় অত্যন্ত লজ্জাজনকও বটে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এই ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এতে দলের ভেতরের কিছু ব্যক্তি যেমন জরিত তেমনি তৃতীয় পক্ষও সম্পৃক্ত। উভয় পক্ষই গিয়াস উদ্দিন সাহেবকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। মামুন মাহমুদের এই ঘটনার পরেই জুয়েল মীর ওরফে পাগলা জুয়েল একজনকে আটক করা হয়। ইতোমধ্যে সে ১৪৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছে। সেই জবানবন্দির কোথাও গিয়াস উদ্দিন পরিবারের কারো নাম উল্লেখ করেনি। তার পরেও একটি মহল পুলিশকে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করে ঈদের চারদিন আগে গিয়াস উদ্দিন সাহেবের বাড়িতে অভিযান চালাতে বাধ্য করেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এই ঘটনায় গিয়াস উদ্দিন সাহেবের ছোটো ছেলে গোলাম মোহাম্মদ কাউসারকে জড়ানোর হীন চেষ্ঠা করা হচ্ছে।

তারা আরও বলেন, সাংবাদিক ভাইয়েরা আপনারা জাতির বিবেক। আপনারা আপনাদের অনুসন্ধানী রিপোর্টের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উৎঘাটন করে প্রচার করার জন্য বিনীত অনুরোধ রইলো।