প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে...

খোকাকেই এমপি হিসেবে চায় সোনারগাঁবাসী

86

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে আছেন সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা। গত দুই মেয়াদে এমপি থাকার সুবাদে নির্বাচনী এলাকার আনাচে-কানাচে ঘুরে মানুষের মনে স্থান করে নিয়েছেন জাতীয় পার্টির মনোনীত এই প্রার্থী এমনটাই জানিয়েছে সোনারগাঁবাসী।

সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন ইউনিয়ন, পাড়া-মহল্লা ঘুরে স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি থাকাকালীণ সময়ে তথা গত ১০ বছরে সোনারগায়ে যে উন্নয়ন হয়েছে তা বিগত সময়ে কোনো সংসদ সদস্যই করতে পারেনি। বর্তমানেও নানা উন্নয়ন কাজ চলমান আছে। তাই আগামী নির্বাচনেও খোকাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তারা।

লিযাকত হোসেন খোকার সাথে ভূইয়া ফাউন্ডেশন নেতৃবৃন্দের সাক্ষাত (ফাইল ফটো)

নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের আওতাধীণ শম্ভুপুরা ইউনিয়নের বাসিন্দা ফিরোজ আহমেদ বলেন, সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা জনসম্পৃক্ত। স্থানীয়দের প্রয়োজনে তাকে পাশে পাওয়া যায়। আবার উন্নয়ন কাজেও আশপাশের সংসদীয় আসনের তুলনায় বেশ এগিয়ে তিনি।

পিরোজপুর ইউনিয়নের প্রবীণ বাসিন্দা আলীনুর বলেন, এক সময়ে বিএনপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিতি থাকলেও জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকার আন্তরিকতা, মহানুভবতা, কাজ করার মানসিকতার কারণে আসনটি বর্তমানে মহাজোটের দুর্গে পরিণত হয়েছে। যার ফলে এবারের নির্বাচনেও লিয়াকত হোসেন খোকাই জয়ী হবেন বলে মনে করেন তিনি।

সনমান্দি ইউনিয়নের বাসিন্দাদের অনেকে বলেন, নৌকা বুঝি না, লাঙ্গল বুঝি না, সোনারগাঁয়ের উন্নয়নে লিয়াকত হোসেন খোকাকেই চাই।

লিয়াকত হোসেন খোকার সাথে ভলিবল চ্যাম্পিয়ন শিক্ষার্থীদের সাক্ষাত (ফাইল ফটো)

মোগরাপাড়া ইউনিয়নবাসীর মতে, উপজেলার সর্বত্র ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড করে জনসগনের কাছে বেশ জনপ্রিয় খোকা। আর তাই আগামী নির্বাচনেও লিয়াকত হোসেন খোকাই এমপি নির্বাচিত হবেন বলে দাবি তাদের।

স্থানীয়রা আরও জানায়, দুই বার এমপি হলেও নির্বাচনী এলাকার গরীব-দু:খী মানুষ থেকে কখনো বিচ্ছিন্ন হননি জাপার এই এমপি। জনসাধারনের সুখে হেসেছেন, কেঁদেছেন তাদের দু:খে। তাই দলমত নির্বিশেষে খোকা এখন সমগ্র সোনারগাঁবাসীর মুখপাত্রে পরিণত হয়েছেন। সোনারগাঁবাসী জানায়, দলমত বুঝি না, জোট-মহাজোট বুঝি না, আগামী নির্বাচনেও লিয়াকত হোসেন খোকাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করে প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রেখে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সহযোগীতা করবো।

এদিকে, রাজণৈতিক বিশ্লেষক মহলও মনে করে, এবারের নির্বাচনেও খোকারই জয়ী হবার সম্ভাবনা বেশী। কেননা, প্রথমত, দুইবার এমপি থাকা অবস্থায় উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের কারণে জনসম্পৃক্ত খোকা আসনটিতে অন্য প্রার্থীদের চেয়ে ঢের এগিয়ে থাকবে। একইসাথে, প্রতিদ্বন্দ্বীদের মাঝে খোকার দুইবার ও কায়সার হাসনাতের একবার এমপি হওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে, অন্য প্রার্থীদের এমপি হওয়া তো দুরের কথা নূন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বীতা করারও কোনো অতীত অভিজ্ঞতা নেই। দ্বিতীয়ত, কায়সার হাসনাত নৌকার প্রার্থী হলেও আসনটিতে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে জড়িত এমন প্রার্থী আছেন আরও ৩জন। আর তাই স্থানীয় আওয়ামী নেতাকর্মীরাও একাধিক ভাগে বিভক্ত হয়ে নিজেরাই দুর্বল হয়ে পড়বে। ফলে নিজেদের মধ্যকার লড়াইয়ের কারণেও অনেকটা এগিয়ে থাকবে খোকা।

নির্বাচনে জয়ের প্রশ্নে লিয়াকত হোসেন খোকা বলেন, বিগত ১০ বছর যাবৎ সোনারগাবাসীর সাথে আছি। নিজের লোভ-লালসা ত্যাগ করে এলাকার মানুষের জন্য কাজ করছি, নিজের অর্থ সম্পদ বিক্রি করে করোনা মহামারিসহ বিপদে-আপদে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। এলাকার প্রয়োজনীয় কাঠামোগত উন্নয়ন করার চেষ্টা করেছি। আর এজন্য আমি সোনারগাঁয়ের সাধারণ মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি, এটা বড় তৃপ্তি এবং আল্লাহ তায়ালার প্রতি শুকরিয়া জানাই। সোনারগাঁয়ের খেটে খাওয়া মানুষগুলো আমাকে খুব ভালোবাসে।

তিনি বলেন, জনগনের ভালোবাসার আলোকে তাদের উন্নয়নের জন্য সর্বদা কাজ করেছি। মহান রাব্বুল আলামিন তার বান্দাদের সেবা করার যে উদ্দেশ্যে আমাকে জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব দিয়েছিলো, আমি সেই দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছি। আগামী দিনেও যদি নির্বাচিত হই, জনগন যদি আমাকে ভোট দেয় এবং মহান আল্লাহ পাক যদি আমাকে নির্বাচিত করেন, তাহলে অতীতের মতোই নিজেকে সোনারগাঁবাসীর কল্যাণে নিয়োজিত রাখবো।

সূত্র মতে, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনটি জাতীয় সংসদের ২০৬ নম্বর আসন। সমগ্র দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের অন্যতম ধারক ও বাহক সোনারগাঁ উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনটি। এছাড়া, ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ-অর্থনীতির দিক দিয়েও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আসনটি। এই আসনের নির্বাচনী এলাকার উপর দিয়েই দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অবস্থান। সোনারগাঁ পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই আসনটিতে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে টানা দুইবার নির্বাচিত হয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন লিয়াকত হোসেন খোকা।

উল্লেখ, আসনটিতে ১৪ জন জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন, যাদের মধ্যে দুইজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছিলো জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতায় এখনো যারা আছেন, তারা হলেন, কায়সার হাসনাত (আওয়ামী লীগ), লিয়াকত হোসেন খোকা (জাতীয় পার্টি), এবিএস ওয়ালিউর রহমান খান (বিএনএম), এরফান হোসেন দীপ (স্বতন্ত্র), নারায়ণ দাস (বিকল্প ধারার বাংলাদেশ), মো. আবু হানিফ হৃদয় (তৃণমূল বিএনপি), মো, মজিবুর রহমান (বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন), আসলাম হোসেন (স্বতন্ত্র), রুবিয়া সুলতানা (স্বতন্ত্র), মারুফ ইসলাম ঝলক (স্বতন্ত্র), এ.এইচ.এম মাসুদ (স্বতন্ত্র), মো. আরিফ (যুক্ত ফ্রন্ট)। মনোনয়ণ বাতিল হয়েছে মো. জামিল মিজি (জাকের পার্টি), সিরাজুল হক (কংগ্রেস)’র।