খুনের জনপদে পরিনত ফতুল্লার ইসদাইর!

240

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

ফতুল্লা থানার ইসদাইর এলাকায় একের পর এক নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে চলেছে। গত কয়েক মাসে অন্তত চারটি খুনের ঘটনা ঘটেছে ইসদাইর বাজার এবং আশপাশের এলাকায়। আর এসব হত্যাকান্ডগুলো ঘটিয়েছে উঠতি বয়সী বেপরোয়া ছেলেরা।

তাই গোটা ইসদাইর এলাকা জুড়ে এখন সাধারন মানুষের মাঝে চরম আতংক বিরাজ করছে। আবার কখন কোন মায়ের বুক খালি হয় এটা কেউ বলতে পারছে না। তাই সাধারন ঘরের ছেলে মেয়েরা এখন ঘর থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছে। কেননা ইসদাইর এখন এক খুনের জনপদে পরিনত হয়েছে।

এলাকাবাসী জানিয়েছে, ফতুল্লা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন আসার পর থেকে আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে থাকে। ফলে বিষয়টি অনুধাবন করতে সক্ষম হন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও। তাই অল্প দিন থাকার পরেই রকিব উদ্দিনকে ফতুল্লা থেকে বদলী করে দেয়া হয়েছে।

বর্তমানে এই থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসাবে এসেছেন শেখ রিয়াজুল হক দীপু। তিনি কতোটুকু সফল হবে এসকল অপরাধ দমনে বা নিয়ন্ত্রন তাই এখন দেখার বিষয়। কারন পরিস্থিতি যেখানে গিয়ে ঠেকেছে তাতে সফল হতে হলে কঠোর হওয়ার কোনো বিকল্প নেই ফতুল্লার ওসির কাছে, এমনটাই মনে করে ইসদাইরের সাধারন মানুষ।

এদিকে এ বিষয়ে জানতে ওই এলাকার বাসিন্দা নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম জীবনের সাথে যোগোযাগ করা হলে তিনি বলেন, হ্যা, আমরা দেখতে পাচ্ছি সম্প্রতি ইসদাইর এলাকা খুনী সন্ত্রাসীদের অভয়ারন্যে পরিনত হয়েছে। সেখানে মাদক ব্যবসা এখন একেবারেই প্রকাশ্যে চলছে। সবশেষ ঘটনাটি ব্যতিক্রম হলেও মূলত মাদক ব্যবসার আধিপত্যকে ঘিরেই ঘটছে একের পর এক খুনের ঘটনা।

তিনি আরও বলেন, মাত্র অল্প কিছুদিনের ব্যবধানে অন্তত চারজন যুুবক খুন হয়েছে এখানে। প্রত্যেকটি খুনের ঘটনায় পিটিয়ে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এখনই ওই এলাকায় সন্ত্রাসীদের তালিকা করে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

এ বিষয়ে একই রকম প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন ইসদাইর রাবেয়া হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলেন, ইসদাইরের পরিস্থিতি বেশ অনেক দিন ধরেই ভয়াবহ। এলাকায় একের পর ঘটছে খুনের ঘটনা। কিন্তু প্রশাসন রয়েছে নির্বিকার। তাই আমি মনে করি, এখনই যদি এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া না হয় তাহলে থামবে না এই খুনের হোলিখেলা। তাই এ বিষয়ে আমি র‌্যাব ও পুলিশের উর্ধ্বতন অফিসারদের জরুরী এবং কঠোর পদক্ষেপ আশা করছি।

প্রসঙ্গত, ইসদাইর এলাকা বছরের পর বছর ধরেই সন্ত্রাসী আর মাদক ব্যাবসায়ীদের অভয়ারন্য হিসাবে বিবেচিত হয়ে আসছে। অত্র এলাকায় মাদকের হাট বসে অনেকটা প্রকাশ্যেই। এছাড়া কিছুটা রাজনৈতিক শেল্টারে থেকে কিশোর যুবকরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ফলে অত্র এলাকায় এখন নুনের চেয়ে খুন সস্তা হয়ে উঠেছে। তাই প্রশাসন গাফিলতি করলে আরো বহু মায়ের বুক খালি হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।