সদর উপজেলা কৃষকলীগ নেতা কাশেম সম্রাট ও রানার কান্ড!...

খাবার ও বস্ত্র নিতে আসা মানুষদের ৫ ঘন্টা বসিয়ে রাখার অভিযোগ

171

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বেশ ঢাক-ঢোল পিটিয়ে শোক দিবসের আয়োজন করে প্রয়াত কৃষকলীগ নেতা, দৌলত মেম্বারের পুত্র সদর থানা কৃষকলীগের আহবায়ক কাশেম সম্রাট ও সদস্য সচিব রানা। শোক দিবস উপলক্ষ্যে মিলাদ, খাবার ও বস্ত্র বিতরণের আয়োজন করে তারা। তবে, এই খাবার ও বস্ত্র নিতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন ছিন্নমূল মানুষেরা। বেলা ১২ টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দীর্ঘ সাড়ে ৫ ঘন্টারও বেশী সময় অপেক্ষা করানোর অভিযোগ তাদের।

এছাড়া, যখন খাবার ও বস্ত্র বিতরণ করা হয়, তখন হুড়োহুড়ি সৃষ্টি হয়, হুড়োহুড়ি করে প্রচন্ড বৃষ্টিতে ভিজেই অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করতে হয় সহায়তা নিতে আসা এসকল মানুষদের। আয়োজকদের এমন কান্ডজ্ঞানহীন কর্মকান্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপস্থিত জনসাধারণ। এসময় তারা বলতে থাকেন, এতো ঢাক-ঢোল পিটিয়ে আয়োজন করে সাধারণ মানুষদের এভাবে কষ্ট না দিলেও পারতো কাশেম ও রানা’রা।

গতকাল শনিবার দুপুরে চর সৈয়দপুর এলাকায় শোক দিবস উপলক্ষ্যে এই খাবার ও বস্ত্র বিতরণের আয়োজন করা হয়। কিন্তু অতিথির আগমনে দেরির অজুহাতে নির্ধারিত সময়ে দেওয়া হয়নি বস্ত্র ও খাবার। এতে বিরক্ত হয়ে অনেকে বস্ত্র ও খাবার সহায়তা না নিয়েই বাড়ি চলে যেতে উদ্যত হন।

এসময় খাবার ও বস্ত্র নিতে আসা অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলেন, ১২টা থেকে না খেয়ে বসে আছি এখানে। খাবার ও কাপড় দেয়ার নামে আমাদেরকে এখানে একরকম আটকে রেখে লোকজনের উপস্থিতি দেখানো হচ্ছে অতিথিদের। অথচ আমাদেরকে গতকাল স্লিপ দিয়ে বলা হয়েছিলো যোহর নামাজের পরপরই খাবার ও কাপড় দেয়া হবে। এখন বিকেল ৪টা বাজে, এখনও আমরা না খেয়ে বসে আছি।

জানা গেছে, বস্ত্র বিতরণ করতে ৩ শতাধিক মানুষকে স্লিপ দেয়া হয়েছে। হতদরিদ্র এসব মানুষকে বেলা ১২টার সময়ই অনুষ্ঠানস্থলে জড়ো করে কাশেম সম্রাট, রানা ও তাদের সহযোগীরা। দুপুর দেড়টায় বস্ত্র ও খাবার বিতরণের কথা থাকলেও অতিথির আগমনে বিলম্ব হওয়ায় সহায়তা প্রার্থীদের দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখা হয়। এদের অনেকেই নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা আগে অনুষ্ঠানস্থলে এসেছিলেন। এর ফলে শুধু আনুষ্ঠানিকতার কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকে তারা ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে পড়েন।

দুপুর ৩টায় অনুষ্ঠানস্থলে আসেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চন্দন শীল। এরপর শুরু হয় বক্তৃতার পালা। আরও প্রায় দেড় থেকে ২ঘন্টা বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথিসহ বিশেষ অতিথিবৃন্দ। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষকলীগের সাবেক সভাপতি নাজিম উদ্দিন, বর্তমান আহবায়ক এড. ওয়াজেদ আলী খোকন প্রমুখ।

সহায়তা নিতে আসা ষাটোর্ধ্ব এক নারী জানান, ১২টার সময় এখানে নিয়ে আসা হয় তাকে। এরপর অতিথিরা আসার পর দীর্ঘক্ষণ বক্তৃতা দেয়ার পর বিকেল ৫টায় হুড়োহুড়ি করে কাপড় ও খাবার নিতে হয় তাকে। আরেক নারী জানান, খাবার ও কাপড় নিতে এসে অনেক কষ্ট হয়েছে। অনেককে বাড়ির কাজ ফেলে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হয়েছে। এসময় দীর্ঘক্ষণ বসে থাকতে বয়স্কদের কষ্ট হয়েছে বেশি।

এব্যাপারে জানতে সদর উপজেলা কৃষকলীগের আহবায়ক কাশেম সম্রাটের মুঠোফোনে কল করলে, কল রিসিভ করে অপর এক ব্যক্তি বলেন, ভাইজান মিটিংয়ে আছে, লোকজনের সাথে কথা বলছে, পরে কথা বলবে আপনার সাথে।

তবে, অতিথিদের উপর দায় চাপিয়ে সদর থানা কৃষকলীগের সদস্য সচিব রানা বলেন, অতিথিরা আসতে দেরি করেছে তাই বস্ত্র বিতরণ করতে দেরী হয়েছে। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকায় গরীব মানুষেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জানালে রানা বলেন, তারা তো গরীব দেখেই খাবার ও বস্ত্র নিতে এসেছে।