নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ: নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার আলীরটেকে ঈদগাহ ভেঙে ফেলেছেন চেয়ারম্যান জাকির হোসেন। ঈদগাহ মাঠে হচ্ছে বহুতল মার্কেট ও কমিউনিটি সেন্টার। তিনি বলছেন, ঈদগাহ মাঠে নদীতীর রক্ষা ও উন্নয়ণকাজ করা হবে। মার্কেটটি নির্মিত হলে কয়েক হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে।
তবে পঞ্চায়েত কমিটি ও স্থানীয়দের অভিযোগ, উন্নয়ণকাজের নামে তিনি মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দিয়েছেন। এছাড়াও নদীরক্ষা ও উন্নয়ণের নামে এলাকার গণ্যমান্যদের কাছ থেকে নেয়া স্বাক্ষর নিয়ে প্রতারণারও অভিযোগ তুলেছেন কেউ কেউ। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, এখন সেখানে বহুতল মার্কেট হবে বলে শোনা যাচ্ছে।
এসব বক্তব্যের জবাবে জাকির হোসেন বলেন, এলাকার মানুষের দাবির প্রেক্ষিতেই ওই মাঠে মার্কেট নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সকলের সম্মতিতেই এই উন্নয়ণকাজ। ওই মাঠটি কখনোই ঈদগাহ ছিলো না। তবে কয়েকটি ঈদের নামাজ সেখানে পড়া হয়েছে। আনুষ্ঠানিক স্বীকৃত ঈদগাহ এটি নয়। তাছাড়া ঈদগাহ মাঠ সবসময় সংরক্ষিত থাকে। কিন্তু ওই মাঠে সারাদিন গরু-ছাগল চড়তে থাকে, নানা গান-বাজনার অনুষ্ঠানও হয়। বাংলাদেশের কোন ঈদগাহের মাঠে তা হয় না।
ঈদগাহের ওই দেয়ালটি জেলা পরিষদের অর্থায়নে করা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওই দেয়াল স্কুলের জন্য করা হয়েছে। যদি কেউ এর প্রমাণ দিতে পারে তবে আমি নিজে সরকারী জরিমানা দিবো সেই সাথে এলাকাবাসী যে শাস্তি দিবে মেনে নেবো।
ঈদগাহ কমিটির সভাপতি আলীরটেক ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মতিউর রহমান। তার সাথে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে ঈদগাহ কমিটির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আওলাদ হোসেন বলেন, সরকারী এই মাঠটি আমরা ঈদগাহ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছি। এলাকার নানা মানুষের কাছ থেকে টাকা তুলে মাঠটির সংস্কার কাজ করানো হয়। এ মাঠে অনেকে আলেম এসেও ঈদের নামাজ পড়িয়েছেন। তাছাড়া সরকারী বরাদ্দের মাধ্যমেই বাউন্ডারি দেয়ালটি দেয়া হয় বলে জানি।
তবে সরকারী কোন অনুদানেই দেয়াল দেয়া হয়নি চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের এমন বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ওটা চেয়ারম্যান সাহেবের নিজস্ব বক্তব্য। তার বক্তব্যের বিষয়ে আমি কথা বলতে চাই না।
প্রায় দুই দশক ধরে আলীরটেক ইউনিয়নের ডিক্রীরচর মাঠটি ঈদগাহ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। এমনকি সরকারী ওয়েবসাইটে আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদের বাতায়নেও মাঠটি ঈদগাহ হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। গত ৭ মে শনিবার রাতে নদীতীরবর্তী ঈদগাহের দেয়াল গুড়িয়ে দেয়া হয়। এরপর থেকে এ নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়। স্থানীয়রা বলছেন, এ মাঠে দেড়যুগ ধরে ঈদের জামাত হয়ে আসছে। প্রত্যেক ইউনিয়নে একটি ঈদগাহ থাকে। আলীরটেকে ঐতিহ্যবাহী ঈদগাহ হিসেবে ডিক্রীরচর মাঠটি পরিচিত। উন্নয়ণ নিয়ে কারো আপত্তি নেই। কিন্তু ধর্মীয় স্থাপনা ভেঙেই তা কেন করতে হবে।




