সারা দেশে শক্ত বার্তা দিচ্ছে তৃনমূল...

শিগগিরই এই সরকারের বিদায় ঘটবে বলে মনে করে বিএনপি

80
শিগগিরই এই সরকারের বিদায় ঘটবে বলে মনে করে বিএনপি

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

সারা দেশে আরো আগেই ঘুরে দাড়িয়েছে বিএনপি। বিশেষ করে বিএনপির তৃনমূল থেকে খুবই শক্তিশালী বার্তা দেয়া হচ্ছে। তারা যেকোনো মূল্যে সরকারের পতন চায়। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শেখ হাসিনাকে রাস্ট্র ক্ষমতায় রেখে তারা আর কোনো মতেই কোনো নির্বাচনে যেতে রাজী নয়।

প্রয়োজনে রাজপথে জীবন দিতে প্রস্তুত তারা তারপরেও রাজপথ ছাড়তে রাজী নন। আর এটা প্রমানও হয়েছে। কারন চলমান আন্দোলনে বিএনপির পাঁচজন নেতাকর্মীকে গুলি করে হত্যা করার পরও রাজপথ ছাড়েনি বিএনপির নেতাকর্মীরা। বরং রাজপথে তাদের উপস্থিতি আরো বেড়েছে।

তাই দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকী আরো এক বছরের বেশি সময়। এরই মাঝে সারা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেকটাই ঘোলাটে হয়ে পড়েছে। আগামী নির্বাচন কিভাবে হবে এটা নিয়ে মাঠ গরম হয়ে উঠেছে। বিরোধী দল বিএনপি সহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এই সরকারের অধিনে কোনো নির্বাচনে যেতে রাজী নয়। তারা চায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার। কিন্তু বর্তমান সরকার চায় তাদের অধিনে নির্বাচন।

এছাড়া আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মাঝে মতপার্থক্য তীব্র হয়ে উঠেছে। তাই যতো দিন যাচ্ছে ততোই দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে।

এদিকে, এখন থেকে চৌদ্দ বছর আগে আওয়ামী লীগ রাস্ট্র ক্ষমতায় আসার পর থেকে বেশ দাপটের সহিতই দেশ পরিচালনা করে এসেছে। এই চৌদ্দ বছর বিরোধী দলগুলি মাঠের রাজনীতিতে কোনো সুবিধাই করতে পারেনি। বিশেষ করে অন্যতম বিরোধী দল বিএনপি মাঠেই নামতে পারেনি। মামলা মোকদ্দমায় বিপর্যস্ত ছিলো এই দলের নেতাকর্মীরা।

বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ, তাদের বিরুদ্ধে ডজন ডজন গায়েবী মামলা দিয়েছে সরকার। তাই আদালতের বারান্দায়ই কাটছে তাদের অধিকাংশ সময়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এসে সেই বিএনপিই এখন অনেকটাই ঘুরে দাড়িয়েছে। বিএনপির কর্মসূচিগুলিতে আজকাল মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিএনপি নেতারা এখন বক্তব্য দিচ্ছেন আগের তুলনায় দৃঢ় এবং উচ্চস্বরে।

সরকার এবং সরকারী দল নানা রকম চেষ্টা করেও বিএনপিকে থামাতে পারছে না। তাই পরিস্থিতি শেষ পর্যন্ত কোন দিকে মোড় নেয় সেটা বলা যাচ্ছে না। আর এই ঘোলাটে পরিস্থিতির কারনেই সরকারের মিত্র জাতীয় পার্টিও এখন নানা রকম কথা বলতে শুরু করেছে। তারাও এখন সরকার বিরোধী বক্তব্য দিচ্ছে। বিশেষ করে জিএম কাদেরের বক্তব্য মিডিয়া এখন ফলাও করে প্রচার করছে।

তবে দেশের সচেতন মহল, এখনো জাতীয়পার্টির নেতাদের সব কথা বিশ^াস করছেন না। এসব কথা কি তাদের মনের কথা নাকি অন্য কোনো উদ্দেশ্যে এসব কথা বলছে সেই প্রশ্ন রয়েছে। এরই মাঝে জিএম কাদের বলেই দিয়েছেন যে, তারা পরিস্থিতি আরো পর্যবেক্ষন করে স্বিদ্ধান্ত নেবেন। অর্থাৎ সরকার যদি আগামী দিনগুলিতে আরো বেকায়দায় পরে তাহলে সরকারের বিরুদ্ধে জোরালো ভাবে নামবে। আর সরকার সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলে তারা সরকারের সাথে থাকবেন। ফলে এতে জাতীয় পার্টির আগেই সেই সুবিধাবাদী চরিত্রেরই বহি:প্রকাশ ঘটছে।

তবে যে যাই বলুক মোটা দাগে যে কথাটি পরিস্কার করে বলা যায় সেটি হলো দেশের মানুষ এখন কেমন আছে? মানুষ কি খেয়ে পড়ে ভালো আছে? নাকি কষ্টে আছে? দেশে ডলারের রিজার্ভ কমেছে, বেড়েছে ডলারের দাম। লাগামহীন ভাবে বেড়েছে জ¦ালানী তেলের দাম। আর এসব কিছুর পরিনতিতে লাগামহীন ভাবে দেশের বাজারে সব কিছুর মূল্য বেড়ে গেছে। আর এই মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই জাতীয় গণমাধ্যমগুলিতে রিপোর্ট হচ্ছে। কিন্তু সাধারন মানুষের আয় বাড়েনি। এতে খুব স্বাভাবিক কারনেই সাধারন মানুষের মাঝে ক্ষোভ বাড়ছে।

ফলে জনগনের এই ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী দলগুলি রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে চাইছে। বিপরীতে সরকার অনেকটাই নমনীয় আচরন করছে। এছাড়া মানবাধিকার লঙ্গনের দায়ে র‌্যাবের সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের সেংশানের বিষয়টিতো রয়েছেই। এছাড়া পাশর্^বর্তী রাস্ট্র ভারতের আচরনও এবার আর আগের মতো পরিস্কার নয়।

ফলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিযে আরো ঘোলাটে হয়ে উঠতে পারে এমন মতামতই দিচ্ছেন দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকগন। কারন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর গোটা বিশ^ পরিস্থিতিই উত্তপ্ত হয়ে উেেঠছে। ফলে ২০২৩ সালে বিশ্বমন্দার আশংকা করা হচ্ছে। এতে দেশে যদি খাদ্যের মূল্য আরো বাড়তে থাকে তাহলে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি যে আরো জটিল হয়ে পড়বে এতে অনেকেরই কোনো সন্দেহ নেই।