রক্তক্ষীয় সংঘর্ষে আহত আরো ১০/১২ জন...

বক্তাবলীতে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হত্যা মামলার আসামী বাবু নিহত

408

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

বক্তাবলীতে দুই গ্রুপের মারামারির কারনে হৃদয় হোসেন বাবু (৩০) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী ও হত্যা মামলার আসামী নিহত হয়েছে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের আরো কয়েকজন গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হৃদয় হোসেন বাবু বক্তাবলী ইউনিয়ন ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার রাসেলের লোক বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষ থানায় পাল্টাপািল্ট অভিযোগ করেছেন।

তবে এলাকার নিরপেক্ষ সূত্র জানিয়েছে নিহত বাবু রামনগর গ্রামের আবদুল মতিনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা সহ একাধিক মাদকের মামলা রয়েছে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষ্য ফতুল্লা থানায় পৃথক অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ২৪ অগাষ্ট এই বাবু এবং তার সহযোগীরা আলী হোসেন নামক একজনের উপর হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। আলী হোসেনের কাছে তারা চাঁদা দাবী করে আসছিলো। দাবীকৃত চাঁদা না দেয়ায় তার উপর এই হামলা চালানো হয় এবং তাকে রক্তাক্ত জখম করে। ফলে ওই দিন আলী হোসেন ফতুল্লা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরের দিন ২৫ আগষ্ট অভিযোগটি তদন্ত করতে যান ফতুল্লা থানার এসআই বাদল। তখন স্থানীয় ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার রাসেল এসআই বাদলকে বলেন বিষয়টি তিনি স্থানীয় বিচার শালিশের মাধ্যমে মিমাংসা করে দেবেন।

পরে ২ সেপ্টেম্বর রাসেল মেম্বার সকাল ১১টায় বিচার শালিসের আয়োজন করেন। কানাইনগর বেকারী মোড় এলাকায় এই শালিস বসে। শালিসে গন্যমান্য ব্যাক্তিদের মাঝে আরো উপস্থিত ছিলেন ওই গ্রামের পঞ্চায়ের প্রধান আমান উল্লাহ মাদবর, নাজির হোসেন মাদবর, মুল্লুকচান মাদবর, মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন, কামাল হোসেন মাদবর, খোলশেদ আলম মাদবর প্রমুখ। কিন্তু বিচার চলাকালে এক পর্যায়ে দুই গ্রুপের মাঝে সংঘর্ষ বেধে যায়।

এ বিষয়ে উপস্থিত কয়েকজন মাদবর জানান, রাসেল মেম্বারের বাড়িতে আগে থেকে রাখা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এসে বাবু গ্রুপ প্রথমে হামলা চালায়। এক পর্য়ায়ে দুই গ্রুপের মাঝে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হলে উভয় পক্ষের ১০/১২ জন আহত হয়। আহতদের নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। এরই মাঝে গুরুতর আহত বাবু গতকাল সকালে মারা যায়। আহতদের মাঝে রয়েছেন আবদুল হালিম, রাকিব হোসেন, আলী হোসেন, আলাল হোসেন সহ ১০/১২ জন।

এদিকে, কানাইনগর ও রামনগর গ্রামবাসী জানিয়েছেন, হৃদয় হোসেন বাবুর মাদক ব্যবসার সহযোগীদের মাঝে রয়েছে সালাউদ্দিন, আলাউদ্দিন, মহিউদ্দিন ও দাদন। এরা ওই এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। নিহত বাবু বক্তাবলীর দেলোয়ার হত্যা মামলার আসামী। এই হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছিলো। পরে বেশ কিছুদিন জেল খাটার পর জামিনে বেরিয়ে এসে আবারও মাদক ব্যবসা এবং সন্ত্রাস চাঁদাবাজীতে মেতে উঠেছিলো। এরই ধারাবাহিকতায় চাঁদা দাবি করে একজনকে মারধোর করার জেরে গতকাল এই হত্যাকান্ডে ঘটলো। এই ঘটনার পর বক্তাবলীর দুই গ্রামে থমতমে অবস্থা বিরাজ করছে। পুলিশ এখনই সতর্ক না হলে আবারও হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটতে পারে বলে গ্রামের নীরিহ সাধারন মানুষ ধারনা করছেন।

গ্রামবাসী আরো জানিয়েছে, গত ২৪ আগষ্ট আলী হোসেনের উপর হামলার পর পুলিশ তদন্ত করতে গেলে রাসেল মেম্বার যদি দায়িত্ব না নিয়ে বিষয়টি থানা পুলিশের উপর ছেড়ে দিতো তাহলে হয়তো এই হত্যাকান্ডটি ঘটতো না। এছাড়া এ ব্যাপারে ফতুল্লা থানার এসআই বাদলেরও গাফিলতি রয়েছে। তিনি যদি ওই দিন রাসেল মেম্বারের উপর বিচারের ভার ছেড়ে না দিয়ে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করতেন তাহলে হয়তো পরিস্থিতি ভিন্ন হতো। ঘটতোনা এই হত্যাকান্ড।