নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন...

ফ্যসিষ্টরা নির্বাচন চায় না, দেশকে ধ্বংস করতে চায়

224

স্টাফ রিপোর্টার :

গতকাল দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিনের একটি একান্ত সাক্ষাৎকার গ্রহন করা হয়। সাক্ষাৎকারটি নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজের পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো।

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পেক্ষাপট কেমন?

এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এক কথায় বলতে গেলে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট চরম উদ্বেগজনক এবং দেশের জনগনের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর। কারন দেশের দেড় হাজার শিশু কিশোর তরুনদের রক্তের বিনিময়ে যে বিপুল সম্ভাবনা নিয়ে বাংলাদেশ ভয়ানক ফ্যাসিষ্ট শাসনের কবল থেকে মুক্তি পেয়েছে সেই সম্ভাবনা এখন নস্যাৎ করার জন্য দেশী বিদেশী চক্র বেপেরায়া হয়ে মাঠে নেমেছে। স্বৈারাচার শেখ হাসিনা এবং তার দোষররা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পনেরো মাস পরেও আমরা জনগনের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারিনি। আমি মনে করি আরো আগেই দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করে জনগনের ক্ষমতা জনগনের হাতে ফিরিয়ে দেয়া যেতো। কিন্তু সেটা না করায় বাংলাদেশের শত্রুরা সুযোগ নিতে শুরু করেছে। সারা বিশ্বে বাংলাদেলে মানুষের যে স্বাধীনচেতা নয়া ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছিলো এরই মাঝে সেটা নস্যাৎ হতে চলেছে। নানা ছলছুতোয় আমাদেরই অনেকে নির্বাচনের পথে বাধার সৃষ্টি করছে। এতে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আরো নাজুক হয়ে পরছে। তাই বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতি মোতাবেক যদি ফেব্রুয়ারীতে নির্বাচন না হয় তাহলে দেশ আবারও এক চর অনিশ্চয়তার মুখে পতিত হবে। তাই আমি মনে করি এখনই সরকারপ্রধান ড. মুহম্মদ ইউনুস সাহেবকে মানুুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার পক্ষে সৃদৃঢ় অবস্থান নিতে হবে। বর্তমানে ষড়যন্ত্রকারীরা দেশে চরম বিশৃংখলা সৃষ্টি করে চলেছে যা কিনা আমাদের প্রবল সম্ভানাকে নস্যাৎ করে দেয়ার দাড়প্রান্তে রয়েছে।

এমতাবাস্থায় দেশের একটি বড় রাজনৈতিক দলের নেতা হিসাবে আপনাদের কি করা উচিৎ বলে আপনি মনে করেন?

এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেখুন গত বছরের জুলাই আন্দোলনের ফ্যাসিষ্ট সরকার এবং তাদের দোষরদের হঠাতে গোটা দেশের মানুষ একতাবদ্ধ হয়েছিলো। সব দল এবং মতের মানুষ মাঠে নেমেছিলো। কিন্তু খুবই দু:খজনক বিষয় হলো এখন আমরা অনেকেই দেশের স্বার্থ না দেখে নিজেদের স্বার্থের কথা চিন্তা করছি এবং নিজেদের মাঝে কোন্দলে জরিয়ে পড়েছি। তিনি আরো বলেন এখন একটি অবাধ ও সুষ্টু নির্বাচন করার ইস্যু বাদ দিয়ে একেক সময় একেক ইস্যু সৃষ্টি করা হচ্ছে। কখনো অযৌক্তিক পি.আর পদ্ধতির দাবি, আবার কখনো হ্যাঁ না ভোটের দাবি তুলে জনগনের মূল দাবি থেকে ‍দৃষ্টি সরড়য়ে নেয়া হচ্ছে। এতে পলাতক ফ্যাসিষ্ট চক্র এবং তাদের বিদেশী প্রভুরা এই দেশকে ধ্বংস করার সুযোগ পাচ্ছে। এরই মাঝে প্রধান উপদেষ্ঠা বলেছেন নির্বাচনকে ভন্ডূল করার জন্য নাকি দেশে বড় ধরনের নাশকতা বা হামলা হতে পারে। তাই আমি মনে করি আরো আগেই যদি দেশে একটি নির্বাচন হয়ে যেতো তাহলে আর এই সুযোগ তারা পেতো না। তাই আমরা মনে করি এই মুহুর্তে সকল দেশপ্রেমিক শক্তির একটাই দাবি হওয়া উচিৎ যতো তারাতারি সম্ভব ভোটের মাধ্যমে জনগনের সরকার গঠন করা। কারন এটা এখন দিবালোকের মতো পরিস্কার যে পলাতক ফ্যাসিষ্ট এবং তাদের প্রভুরা নির্বাচন নস্যাৎ করার জন্য উঠেপরে লেগেছে। আর বুঝে হোক আর না বুঝে হোক তাদের পাতা ফাঁদে পা দিচ্ছে ৫ আগষ্টের মিত্র শক্তির কেউ কেউ।

এমতাবস্থায় যথা সময়ে নির্বাচজন না হলে নির্বাচন আদায় করার জন্য বিএনপি কি করবে?

এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি এখন জনগনকে সঙ্গে নিয়ে দেখবে ডিসেম্বরে নির্বাচনের তফছিল ঘোষনা হয় কিনা। কারন সারা দেশের মানুষ এখন নির্বাচনমুখী হয়ে পরেছে। মানুষ ভোট দেয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। তাই কোনো অজুহাতেই আর নির্বাচন পিছানো ঠিক হবে না। তাই ডিসেম্বরে তফছিল ঘোষনা না হলে বিএনপি সকল দেশপ্রেমিক শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন আদায় করার জন্য তুমুল আনেদালন গড়ে তুলবে। এর কোনো বিকল্প আছে বলে আমি মনে করি না। যারা নির্বাচন চায় না তারা দেশের শত্রু। তাই আমরা আশা করবো দেশপ্রেমিক সকল শক্তি নিজেদের স্বার্থের কথা চিন্তা না করে দেশের স্বার্থের কথা ভাববে। দেশের জনগনের উপর আস্থা রাখবে।