শোক দিবসে জেলা আওয়ামীলীগের আলোচনা সভায় মেয়র আইভী...

নিজেকে জাহির করতে যে রাজনীতি করে, সে বেশী দিন টিকতে পারে না

149

নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী বলেছেন, যে শুধু নিজের স্বার্থে, নিজের প্রয়োজনে, নিজেকে নেতা জাহির করার জন্য রাজনীতি করেন তারা কিন্তু বেশীদিন টিকে থাকতে পারেনা। আপনাকে এই দেশকে ভালোবাসতে হবে, আওয়ামীলীগকে ভালোবাসতে হবে, বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসতে হবে। এটা শুধু মুখে বললেই হবে না, সেটা কাজে কর্মে প্রমাণ করতে হবে।

স্বাধীণতার মহান স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে জেলা আওয়ামীলীগের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

গতকাল মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) সকালে জেলা-মহানগর আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে এ সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে, জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন মেয়র আইভী।

আইভী বলেন, আওয়ামীলীগ এমন একটা দল, যেখানে থাকবেন, আসবেন, রাজনীতি করবেন, ঠিক থাকবেন। আসবেন না, অভিমান করবেন, কেন উনি ডাকলো না, কয়েকদিনেই ভেসে যাবেন, দলটা এরকমই। এই দলে থাকতে হলে, নিজের অবস্থান নিজেকে তৈরি করে, দলের কর্মসূচী প্রচার করে, দলের নেতা-নেত্রীদেরকে অনার-সম্মান করে, যুদ্ধ-লড়াই করেই আপনাকে এখানে টিকে থাকতে হবে। এটা এরকম ভাবেই হয়ে আসছে।

বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে ব্যানার-ফেস্টুনের রাজনীতি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সারা নারায়ণগঞ্জে যেভাবে ব্যানার-ফেস্টুনের রাজনীতি হচ্ছে। আমরা মনে হয় আমাদের এই রাজনীতিকে ঐ ব্যানার-ফেস্টুনে সীমাবদ্ধ করে রাখছি। এ কারণেই আমার এই কথাগুলো বলা যে, আমাদের তরুণরা তখনই ঐগুলো ছেড়ে সে আসবে, যখন সে তার নিজের চিন্তা-ধারাকে তুলে ধরতে পারবে।

তিনি বলেন, আমরা কিন্তু মানুষের কাছে যাচ্ছি না, আমাদের দলের তথা সরকারের উন্নয়নমূলক কাজগুলোর কথা বলছি না। বিগত ১৫ বছরে তথা এই আওয়ামী সরকারের আমলে এতো কাজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করেছেন যে, আমার মনে হয় আপনার বলেও শেষ করতে পারবেন না।

আগে এতো নেতা দেখি নাই উল্লেখ করে আইভী বলেন, ২০০৩ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবেই মানুষের কাছে গিয়েছি, তখন আমি এতো নেতা দেখি নাই। সকাল ৮টায় বের হয়েছি, রাত ১০টায় বাড়িতে গিয়েছি। হাটতে পারি নাই, পা ব্যাথা হয়েছে। কখনো রিকশায়, কখনো গাড়িতে। অনেক লোকজন মিলে সারাদিন পরিশ্রম করেছি, আমি তো এখন ঐ দিনগুলোকে মিস করি। দল এখন ক্ষমতায়, আমরা একটা/দুইটা কথা বলে, এখানে-সেখানে আয়োজন করে চলে যাচ্ছি। সেভাবে মানুষের সাথে কথা বলছি না।

নতুন নেতৃত্ব গড়ার প্রতি নজর দেয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আজকে যদি জানতে চাওয়া হয়, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে নির্বাচন করতে পারবে এমন ৩জন ব্যক্তির নাম বলা হোক। আমরা চোখ বন্ধ করে নাম বলতে পারবো না, একশ বার আমরা চিন্তা করবো কারে রেখে কার নাম বলবো। কারণ, আমরা সেভাবে কাউকে গড়ে তুলছি না। তাই আমাদেরকে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে হবে এবং তাদেরকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়ে তুলতে হবে। দ্বিতীয়ত, দুই-চার-পাঁচটি নাম আসলে আমরা মন খারাপ করে ফেলি। আওয়ামীলীগ অনেক বড় একটা দল, নেতৃত্বের প্রতিযোগীতা থাকবে, নেতা হবে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকে নমিনেশন দিবে, সেই নির্বাচন করবে।

আলোচনা শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ নিহত সকলের রূহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়।

জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, বষিয়ান রাজনীতিবীদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই’র সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য এড. হোসনে আরা বেগম বাবলী, আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য এড. আনিসুর রহমান দিপু, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এড. আসাদুজ্জামান, খবির উদ্দিন, আদিনাথ বসু, আব্দুল কাদির, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক সদস্য শহীদ উল্লাহ, সামসুজ্জামান ভাসানী, মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাত প্রমুখ।