দল গুছানোর পাশাপাশি আন্দোলনের প্রস্তুতির কথা জানালেন দুই নেতা...

না.গঞ্জে তীব্র গণআন্দোলনের প্রস্তুতি বিএনপির

76
না.গঞ্জে তীব্র গণআন্দোলনের প্রস্তুতি বিএনপির

রফিকুল ইসলাম জীবন :

নারায়ণগঞ্জে একটি তুমুল আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। এই জেলায় মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মামলা মোকদ্দমায় জর্জরিত হলেও তারা আন্দোলনের ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। গতকাল এ বিষয়ে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে আলাপ হয়। সামনে নির্বাচন, আর আসন্ন এই নির্বাচনকে ঘিরে তারা কি করবেন জানতে চাইলে মতামত ব্যাক্ত করেন তারা।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক আলহাজ¦ মুহম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে আরো পনেরো বছর আগে গলা টিপে হত্যা করার পর এবারই প্রথম বাংলাদেশের মানুষ তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পেতে সজাগ ও সোচ্চার হয়ে উঠেছে। দেশের প্রায় আশি শতাংশ মানুষ বিএনপির পাশে রয়েছে। পাশাপাশি এবার বিশ^ বিবেকও জেগে উঠেছে। তাই আমাদের দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে বার বার দেশের মানুষের সকল গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আহবান জানানো হচ্ছে। আর এই অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার একটাই পথ আর সেটা হলো নির্বাচনকালিন সময়ে তত্বাবদায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।

তিনি আরও বলেন, আপনারা দেখতে পাচ্ছেন দেশের মানুষতো বটেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও সরকারকে সব দলের অংশগ্রহনে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য জোরালো ভাবে বলছে। কিন্তু সরকার তাতে কর্ণপত করছে না। সরকার বিদেশীদের নানা রকম মিথ্যা কথা বলে ভুলানোর চেষ্ঠা করছে। কিন্তু আমরা পরিস্কার ভাষায় বলতে চাই, বিদেশীরা কি করবে সেটা বলা না গেলেও এদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ আর কোনো রাতের ভোট বা কারচুপির নির্বাচন চায় না এবং তারা সেটা হতেও দেবে না। তাই আমরা এ ব্যাপারে আন্দোলনের সর্বাত্বক প্রস্ততি নিচ্ছি। থানায় থানায় আমাদের কমিটিগুলি প্রস্তত হচ্ছে। একেবারে ওয়ার্ড থেকে থানা পর্যন্ত কমিটিগুলি ঢেলে সাজানো হচ্ছে। সরকার জনগনের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে না দিলে এবার যে তুমুল আন্দোলন গড়ে উঠবে এতে কারোই কোনো সন্দেহ নেই। এবার আমরা আমাদের ভোটের অধিকার আদায় করার পরেই ঘরে ফিরে যাবো ইনশাআল্লাহ।

একই রকম প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সভাপতি এডভোকেট সাখাওয়াৎ হোসেন খান। তিনি বলেন, সব কিছুরই একটা শেষ আছে। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এখন যে বয়স তাতে তার অবসর নেয়ার সময় হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগে তার বিকল্প কেউ নেই। আর তার সুবিধাভোগীরা এ বিষয়টি বুঝতে পেরে অনেকেই তার পেছন থেকে সরে যাচ্ছে। অনেকে চুপ হয়ে আছে। তার উপর দেশের মানুষ বিক্ষুব্দ হয়ে উঠেছে। দ্রব্যমূল্যের যাতাকলে একেবারে দিশেহারা মানুষ। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থারও মারাত্মক অবনতি ঘটেছে। এমতাবস্থায় এই সরকারকে আর চায় না মানুষ।

তিনি আরও বলেন, গণতান্ত্রিক বিশ্বও এবার বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য বেশ সোচ্চার হয়ে উঠেছে। সবাই বেশ জোরালো ভাবেই নজরধারী করছে। তাই সরকার সত্যিই বেকায়দায় রয়েছে। তবে আমরা মনে করি সরকার হয়তো সহজে ক্ষমতা ছাড়তে চাইবে না। ওরা দেশের চূড়ান্ত ক্ষতি হওয়ার পরই ক্ষমতা ছাড়তে চাইবে। কিন্তু আমরা চাই শান্তিপূর্ণ পন্থায় একটি সর্বাত্বক আন্দোলন গড়ে তুলতে। দেশের সর্ব স্থরের সাধারন মানুষকে সম্পৃক্ত করে ব্যাপক গণআন্দোলন গড়ে তুলে এই সরকারকে বিদায় জানাতে। আশা করি খুব শিগগিরই এ দেশের আকাশে গণতান্ত্রের নতুন সূর্য্য উধিত হবে ইনশাআল্লাহ। আমরা একটি তীব্র গণআন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।