না.গঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ দুই আসনে বিএনপির পাঁচ প্রার্থী

93

রফিকুল ইসলাম জীবন :

নারায়ণগঞ্জের দুটি আসনের দিকে তিনজন শিল্পপতি নজর রাখছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। দেশে যদি আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয় এবং সেই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহন করে তাহলে নারায়ণগঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ দুটি আসনে মনোনয়ন চাইতে পারেন তিনজন শিল্পপতি। এরা হলেন মডেল গ্রুপের মালিক মাসুদুজ্জামান, প্রাইম গ্রুপের মালিক আবু জাফর আহম্মেদ বাবুল এবং ফতুল্লার শিল্পপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ শাহ আলম। এই তিন শিল্পপতি নারায়ণগঞ্জ-৫ এবং নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের দিকে নজর রাখছেন বলে জানিয়েছে তাদের ঘনিষ্ঠ সূত্র।

তবে এই তিন শিল্পপতির মাঝে ফতুল্লার শাহআলম সরাসরি বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলেন এবং নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে একবার নির্বাচনও করেছেন। তিনি বিএনপিতে এসে বিভিন্ন পদও লাভ করেছিলেন। তিনি একাধারে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি পদে ছিলেন। কিন্তু ফতুল্লা থানা বিএনপির বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, শাহআলম শেষ পর্যন্ত সরকারের চাঁপে পরে বিএনপিতে টিকতে পারেননি এবং দলের সকল পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। এছাড়া তার বড় ভাই অপর শিল্পপতি শাহজাহান নানা রকম সমস্যায় জরিয়ে পরেন এবং বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমে তাকে নিয়ে নেতিবাঁচক রিপোর্ট প্রকাশ হয়। মূলত এরপর থেকেই বিএনপির রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন শাহআলম। কিন্তু এতো কিছুর পরেও দেশে যদি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয় এবং বিএনপি সেই নির্বাচনে অংশগ্রহন করে তাহলে তিনি যে আবারও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন এতে কারোই কোনো সন্দেহ নেই।

এদিকে, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে এই আসনে এবার বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন এবং অনেকের মতে তার মনোনয়ন লাভের সম্ভাবনাই বেশি। কিন্তু তারপরেও এই আসনটির দিকে তীক্ষ্ম নজর রাখছেন শাহ আলম। তিনি ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জে তার লোকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। এদের মাঝে উল্লেখযোগ্য হলেন জেলা বিএনপির বর্তমান যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, বিএনপি নেতা মনিরুল ইসলাম রবি, এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ্বা,স জাহিদ হাসান রোজেল এবং পান্না মোল্লা প্রমুখ। এই নেতাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে তিনি এই আসনে তার একটি অবস্থান ধরে রাখার জন্য বেশ তৎপর রয়েছেন বলে জানা গেছে।

অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে শিল্পপতি মাসুদুজ্জামান এবং আবু জাফর আহম্মেদ বাবুল সরাসরি বিএনপির রাজনীতি না করলেও তারা আগাগোড়াই বিএনপিপন্থী শিল্পপতি হিসাবে পরিচিত। এছাড়া শিল্পপতি মাসুদুজ্জামানের চাচা সাবেক কাউন্সিলর জমশের আলী ঝন্টু সরাসরি বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। তিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের একটি ওয়ার্ডে বিএনপির সভাপতি ছিলেন। তাই মাসুদুজ্জামানের পরিবার এই শহরে বিএনপির পরিবার হিসাবেই পরিচিত।

অপরদিকে, আবু জাফর আহম্মেদ বাবুল নিজেও একজন বিএনপিপন্থী শিল্পপতি হিসাবে পরিচিত। বিএনপির উচ্চ পর্যায়ে আরো আগে থেকেই তার যোগাযোগ রয়েছে। এমন কি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে তার যোগাযোগ থাকার গুঞ্জন রয়েছে। তাই তিনিও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আগামী নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছে তার ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো। তবে এই আসনে বর্তমানে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাসীদের মাঝে এগিয়ে রয়েছেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট সাখাওয়াৎ হোসেন খান।

তাই শেষ পর্যন্ত এই দুটি আসনের দিকে তিন শিল্পপতির নজর থাকলেও কারা পান মনোনয়ন এ নিয়ে স্থানীয় জনগনের মধ্যে এরই মাঝে ব্যাপক কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে। তবে সব কিছুই নির্ভর করছে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহনমূলক নির্বাচনের উপর। তাই আগামী দিনগুলিতে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোনদিকে মোড় নেয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।