নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একে অপরের বিরুদ্ধে লেখালেখি এবং সিনিয়র-জুনিয়র নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে আহমেদ অনন্ত শাহ (১৫) নামে এক কিশোর তারই সমবয়সী অপর কিশোরদের ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছে। ওই ঘটনায় রাকিবুল ও রেজওয়ান নামে অনন্তর আরও দুই বন্ধু আহত হয়।
রোববার রাতে নারায়ণগঞ্জ নগরীর জামতলা কেন্দ্রীয় ঈদগাহের সামনে ওই ঘটনা ঘটে। আহত অনন্ত নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরীফ উদ্দিন সবুজের বড় ছেলে।
ছুরিকাঘাতে আহত অনন্ত’র পিঠে ১৮টি সেলাই দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ তিনশ শয্যা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ অমিত রায়। ঘটনার পরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত জিহাদ, জিদান ও আরিফ নামে ৩ কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে। আহত অনন্ত নগরের আইডিয়াল হাই স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। গ্রেপ্তার ৩ কিশোর নগরের আদর্শ স্কুলের একই শ্রেণির শিক্ষার্থী।
এদিকে, অনন্তর বাবা শরীফ উদ্দিন সবুজ সোমবার বিকেলে বাদি হয়ে গ্রেপ্তার ৩ কিশোরসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ১৫ জনের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
এ ঘটনার দেড় বছর আগে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সহ সভাপতি রফিকুল ইসলাম জীবনের বড় ছেলে কলেজ শিক্ষার্থী আবু বক্কর সিদ্দিক হামিমকে প্রকাশ্যে রাস্তা থেকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়। ওই ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের হলেও অদ্যবধি পুলিশ ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে সনাক্ত বা গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
ঘটনা প্রসঙ্গে সাংবাদিক শরীফ উদ্দিন সবুজ বলেন, রোববার রাতে অনন্ত তার অপর ৪ বন্ধুর সঙ্গে নগরের মাসদাইর কবরস্থানে দাদা-দাদির কবর জিয়ারত করতে যায়। ফেরার পথে নগরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহের সামনে অনন্ত ও তার বন্ধুদের পথরোধ করে সমবয়সী অপর ১৫-২০ জন কিশোর। তারা অনন্তকে জিজ্ঞেস করে তার নাম অনন্ত এবং সে সিয়ামের বন্ধু কিনা। উত্তরে অনন্ত হ্যাঁ সূচক উত্তর দিয়ে, কি হয়েছে জানতে চাইলে প্রতিপক্ষ কিশোররা অনন্ত ও তার বন্ধুদের টেনে হিঁচড়ে ঈদগাহের ভেতরে নেওয়ার চেষ্টা করে। ওই সময় অনন্তর সঙ্গে শক্তিতে পেরে উঠতে না পেরে তার পিঠে ছুরিকাঘাত করা হয়। মারধর করা হয় অনন্তর সঙ্গে থাকা রাকিবুল ও রেজওয়ানকে। ঘটনার পর অনন্ত দৌড়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ তরে নিরাপদ স্থানে চলে আসে।
আহত অনন্তকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ তিনশ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার পিঠে ১৮টি সেলাই দেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ অমিত রায়।
ঘটনার পর সবুজ তার ছেলের বন্ধু সিয়ামকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন, হামলাকারী কিশোররা এবং সিয়াম নগরের আদর্শ স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। ফেসবুকে সিয়ামের সঙ্গে হামলাকারীদের নানা বিষয় এবং সিনিয়র-জুনিয়র নিয়ে বিরোধ ছিল। কিন্তু এসবের সঙ্গে অনন্তর কোন যোগসূত্র ছিল না। অনন্ত এবং সিয়াম একই এলাকায় বসবাসের সূত্রে একে অপরে বন্ধু। সে কারণে হামলাকারীরা অনন্তর উপর হামলা করে থাকতে পারে বলে সিয়ামের ধারণা।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি রকিবুজ্জামান এ ব্যাপারে বলেন, সিনিয়র-জুনিয়র নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনায় আহত এবং হামলাকারীরা পৃথক দু’টি স্কুলের শিক্ষার্থী। ঘটনার পর ৩ কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। থানায় মামলা হয়েছে।