নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:
ঐতিহ্যবাহী নারায়ণগঞ্জ ক্লাবটি হলো নারায়ণগঞ্জের ব্যবসাবানিজ্যের মূল চালিকা শক্তি। এই ক্লাবটি নিয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরবাসীর মাঝে নানা রকম নেতিবাঁচক প্রচার থাকলেও বাস্তবতা হলো এই ক্লাবটি দেলের আন্তর্জাতিক বানিজ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। কারন বিদেশী ক্রেতারা নারায়ণগঞ্জের গার্মেন্ট সহ বিভিন্ন কারখানা পরিদর্শনে এসে পরিদর্শন শেষে এই নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে এসে এখানে বসে বিজনেস ডিল করেন। তারা এখানে খাওয়াদাওয়া করেন এবং বিশ্্রাম নেন। প্রয়োজনে তারা এই ক্লাবের ফাইভস্টার মানের রুমগুলিতে রাত কাটান।
এক কথায় এই নারায়ণগঞ্জে ক্লাব এখন বিদেশী ক্রাতাদের রিক্রেয়াশান সেন্টার হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। শুধু তাই নয় ক্লাবটি নারায়ণগঞ্জের সকল ব্যবসায়ীদের আলাপ আলোচনার মূল কেন্দ্র হিসাবে ব্যাবহৃত হচ্ছে। তাই এই শহরবাসীর একটি অংশের মানুষ এসব বিষয় আমলে না নিয়েই ক্লাবটিকে নেতিবাঁচক হিসাবে উপস্থান করছেন।
তাদের মতে ওসমান পরিবাবেরর লোকেরা এই ক্লাবটিকে তাদের পারিবারকি সম্পত্তি মনে করতো। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবকে পলাতক এমপি শামীম ওসমান এবং তার দূর্ণীতিবাজ শ্যালক তানভির আহম্মেদ টিটু নিজেদের বাপ দাদার সম্পত্তি মনে করতো। আর এখানে বসেই ওরা সারা নারায়ণগঞ্জ জেলায় সকল অপকর্ম পরিচালনা করতো। যার ফলে সারা নারায়ণগঞ্জের মানুষ এ ক্লাবের ভালো দিকটি না দেখে খারাপ দিকটিই দেখেছে বড় করে।
অভিযোগ রয়েছে শামীম ওসমান এবং তার শ্যালকের নেতৃত্বে ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্রদের উপর যে গুলি চালানো হয়েছে সেটা করার সময় ওসমানরা এই ক্লাবকে তাদের ঘাটি হিসাবে ব্যবহার করেছে। আর এ কারনেই আন্দোলনের সময় জনরোষের শিকার হয়েছে ক্লাবটি। উত্তেজিত জনতা এই ক্লাবটির অন্তত বিশ কোটি টাকার ক্ষতি করেছে। ক্লাবের আসবাব পত্র চেয়ারটেবিল থেকে শুরু করে নির্মান সাম্গ্রী পর্যন্ত সব কিছু লুট করে নিয়ে গেছে। খুলে নিয়ে গেছে প্রায় শতাধিক এসি এবং ফ্রিজ টিভি সহ সব কিছু। আগুন দিয়ে জ¦ালিয়ে দেয়া হয়েছে ক্লাবের একটি বড় অংশ। যার ফলে দেশী বিদেশী ব্যবসায়ীদের অন্যতম প্রানকেন্দ্র এই নারায়ণগঞ্জ ক্লাবটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় নারায়ণগঞ্জের গার্মেন্ট সেক্টর সহ সকল ব্যবসায়ী সেক্টরগুলি ক্ষতির মুখে পতিত হয়েছে।
তাই নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীরা যতো দ্রুত সম্ভব ক্লাবটি ব্যবহার উপযোগী করার জন্য আপ্রান চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিগত আড়াই মাসে ক্লাবের গুরুত্বপূর্ণ সার্ভিসগুলি চালু করা হয়েছে। রেস্টুরেন্ট সহ গুরুত্বপূর্ন সব কয়টি সার্ভিসই পূরোদমে চলছে। আর ক্লাবটিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন এই ক্লাবের বর্তমান সভাপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ¦ সোলেমান এবং তার সঙ্গে রয়েছেন ব্যবসায়ী কাশেম হুমায়ুন, ইকবাল হাবীব, মাহমুদ হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার আমিনূজ্জামান, ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন সহ আরো অনেকে। এছাড়া ক্লাবের প্রত্যেক সদস্যই যার যার অবস্থান থেকে আপ্রান চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সভাপতি এম সোলায়মান।
গতকাল সরেজমিন ক্লাবটি পরিদর্শ করে দেখা গেছে এইটির পূননির্মানে রাতদিন একাকার করে কাজ চলছে। ক্লাব সভাপতি সোলায়মান নিজে সার্বক্ষনিক তদারকী করছেন। এরই মাঝে নামাজ ঘরটিও আগের তুলনায় আরো সুন্দর করে পূননির্মান করা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন দুই কোটি কোটি টাকা খরচ করা হলেই ক্লাবটি পূর্বেও অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভভ। ব্যবসায়ীরা নিজেরা ডোনেশান দিয়ে মেরামত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে সভাপতি এম সোলায়মান জানান।