নারায়ণগঞ্জ ফার্স্ট নিউজ:
ভারতে গিয়ে খুব একটা পাত্তা পাননি জিএম কাদের। সেখানে তিনি কাদের সাথে বৈঠক করেছেন সেটা না জানালেও বুঝাই যায় যে গুরুত্বপূর্ণ কারো সাক্ষাৎ পাননি তিনি। বরং ভারতের সরকারী দল বিজেপির তৃতীয় শ্রেনীর ২/১ জন নেতার সাথে কথা বলে তাকে ফিরে আসতে হয়েছে। তাই এখন বলছেন তাদের অনুমতি ছাড়া নাকি তিনি কিছু বলতে পারবেন না।
অথচ এই জিএম কাদেরকেই মনে করা হচ্ছিলো স্বাধীনচেতা একজন মানুষ। বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে তিনি জনগনের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সরকারের যে তীব্র সমালোচনা করে এসেছেন তাতে অনেকের মনে হয়েছিলো তিনি হয়তো এবার জনগনের পক্ষে শক্ত অবস্থান নেবেন। কোনো পাতানো নির্বাচনে অংশ নেবেন না। আর বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়ে জনগনের পক্ষে কথা বললে জেলজুলুমের সম্ভাবনা থাকবে এটাই স্বাভাবিক।
তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করেন, আসলে জিএম কাদের ভারতের কাছ থেকে নির্দেশনামূলক কিছু পান নি। তারা তাকে চূড়ান্ত কিছু বলেননি। হয়তো বলেছেন জাতীয় পার্টিকে কি করতে হবে সেটা তারা তাকে পরে জানাবেন। পরিস্কার করে সরকারের পক্ষে বিপক্ষে এখনো তাকে কিছু বলা হয়নি। তাই দেশে ফিরে তিনি একেবারে চুপ হয়ে গেছেন। কিছুই বলতে পারছেন না। তবে তার এই আচরন দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মাঝে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। বরং টিভি টকশোগুলিতে অনেকেই জানতে চাইছেন তিনি কোন দেশের নেতা? তিনি কি ভারতের নেতা, নাকি বাংলাদেশের নেতা?
অন্যথায়, তিনি কেনো ভারতের নির্দেশ ছাড়া কিছুই বলতে পারবেন না? তবে জিএম কাদের যাই বলেন না কেনো, অনেক দিক দিয়েই কিন্তু ভারত যে এখন আর এই সরকারকে আগের মতো পছন্দ করছে না সেটা কিন্তু ব্রিকস সম্মেলনে প্রমান হয়ে গেছে। বাংলাদেশেতো বটেই আন্তর্জাতিক মিডিয়াও বলছে মূলত ভারতের কারনেই বাদ পরেছে বাংলাদেশে। ভারত চায়নি বাংলাদেশ ব্রিকসে স্থান পাক। আর এর প্রধান কারন হলো বাংলাদেশের অধিক চীন প্রীতি।
অপরদিকে, এ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরন করে চীনের সাথে মাখামাখিটা মোটেও ভালো ভাবে নেয়নি যুক্তরাস্ট্র। আর এ দেশে গণতন্ত্র থাক বা না থাক চীনের সাথে মাখামাখি ভারতও ভালো চোখে দেখেনি। তাই যুক্তরাস্ট্র আর ভারত মনে করে আবার যদি এই সরকার বিনা ভোটে রাস্ট্র ক্ষমতায় আসিন হয় তাহলে বাংলাদেশকে একেবারেই গিলে খাবে চীন। যা কিনা এখন যুক্তরাস্ট্র ও ভারতের অন্যতম মাথা ব্যাথার কারন। তাই এই দুই দেশ এখন বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চাইছে। এটা নিশ্চয়ই জিএম কাদেরের বুঝতে বাকী নেই। তাই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন ভারত যখন জিএম কাদেরকে মুখ খুলতে বলবে সেটা এমন সময় বলবে যখন আর সরকারের পক্ষে জিএম কাদেরকে ম্যানেজ করা মোটেও সম্ভব হবে না।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে বলা চলে, নি:সন্দেহে আগামী নির্বাচনের আগে জিএম কাদের অবশ্যই বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে। আর এটা তারা নেবে ভারতের পরামর্শেই। আর যুক্তরাস্ট্র আরো আগে থেকে সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে স্যাংশান দিয়েছে এবং ভিসা নীতি ঘোষনা করে রেখেছে। তাই আগামী দিনে জিএম কাদেরের গতিবিধি কি হয় সেদিকেই রয়েছে সকলের নজর। ভালো কিছু ঘটার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না।